নিজস্ব প্রতিবেদক (মুন্সীগঞ্জ):
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের মামলার পলাতক আসামিকে আটক করেছে দক্ষিন কোরিয়ার পুলিশ। গত রবিবার দক্ষিণ কোরিয়ার গিয়ংনাম প্রদেশের ছাংওয়ান এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আটক করা হয়। পরে স্থানীয় পুলিশ তাকে ইমিগ্রেশন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে।
বর্তমানে তিনি ইনসান ইমিগ্রেশন পুলিশের হেফাজতে আছেন। কুরিয়ার ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। আটকে সাজ্জাদ হোসেন সাগর গত বছরের ৫ই আগস্টের পর দেশ থেকে পালিয়ে সৌদি আরব হয়ে দক্ষিণ কোরিয়া গিয়ে গোপনে আশ্রয় নেয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম বিপ্লবের সহযোগিতা ও তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেখানকার স্থানীয় পুলিশ সম্প্রতি সাজ্জাত হোসেন সাগরকে আটক করতে সক্ষম হয়।
২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় মুন্সীগঞ্জ সুপার মার্কেট এলাকায় তিন জন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন এবং সাংবাদিক সহ দুই শতাধিকের বেশি ছাত্র জনতা আহত হয়।
ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র সাজ্জাত হোসেন সাগর। ঘটনার পর তিনি পালিয়ে সৌদিআরব হয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় পালিয়ে যান।
দক্ষিণ কোরিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশী প্রবাসীরা জানায়, এই সাগর দেশ থেকে পালিয়ে সৌদি আরবে চলে যায়, সেখান থেকে সাইফুলের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া এসে ছাংওয়ান এলাকায় নাম পরিচয় গোপন করে উরিম নামক একটি কারখানায় কাজ নেয়।
এরপরই দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম বিপ্লব সাগরকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার ভয়-ভীতি দেখিয়ে সাগরের কাছ থেকে প্রথমেই টাকা হাতিয়ে নেয় এবং পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে প্রতিমাসে সাইফুল সাগরের কাছ থেকে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিত।
টাকা পয়সা লেনদেনের একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ সৃষ্টি হয়। এই নিয়ে গত রবিবার সাইফুল ও সাগরের ভিতরে কথা কাটাকাটি হয়। এই কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সাইফুল স্থানীয় পুলিশ ডেকে সাগরকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়। আর কোরিয়াতে থাকার বৈধ কাগজপত্র না থাকায় সাজ্জাদ হোসেন সাগরকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে নেয়।
দক্ষিণ কুরিয়ার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ও গণমাধ্যম একাধিক সূত্র জানায়, বিদেশি পুলিশের সহায়তায় আসামিকে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। খুব শিগগিরই তাকে বাংলাদেশে এনে আদালতে তোলা হবে। এদিকে ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেন, দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর আসামি ধরা পড়ায় ন্যায়বিচারের পথ সুগম হলো। তারা দ্রুত বিচার দাবি করেছেন।
মন্তব্য করুন